সকালের বুলেটিন ডেক্স: ১৭ জুলাই ২০২৪ , ৭:৪৬:২০ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম নগরের প্রবর্তক মোড়ে চসিকের চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ১৬ জুলাই মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের চকবাজার ওয়ার্ডের আলোচিত এ কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুর নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কোটার সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বিকেলে নগরের প্রবর্তক মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় প্রবর্তক মোড়ের বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের রূপনগর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে মিমি সুপারমার্কেট পর্যন্ত অংশে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। এ সময় সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলেও শুরুতে কোনো ধরনের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেনি।
কিন্তু মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুর নেতৃত্বে একদল কর্মী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গের দিক থেকে প্রবর্তক মোড়ে আসেন। তাদের আরও কিছু সমর্থক শেভরনের দিক থেকে প্রবর্তক মোড়ে এগিয়ে আসেন। তাদের অনেকের হাতে লাঠি ও হকি স্টিক ছিল। পরে তারা সবাই একত্র হয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়ে হামলা শুরু করেন। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন টিনুর অনুসারী হামলাকারীরা। পরে প্রাণ বাঁচাতে শিক্ষার্থীরা আশপাশের গলিতে ঢুকে পড়েন। সেখানে গিয়েও তাদের মারধর করা হয়। হামলার পর একপর্যায়ে সমর্থকদের নিয়ে বীর দর্পে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনু। এতে অন্তত চার পাঁচজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনু বলেন, ‘ওরা (আন্দোলনকারী) সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করছিল। তাই সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করতে বাধা দিতে ছেলেরা (তার সমর্থক) ওখানে গিয়েছিলেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল।’
নিজেকে নগর যুবলীগ নেতা ও শিক্ষামন্ত্রীর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে সাপাই গাইতে চান নূর মোস্তফা টিনু। নির্বাচিত কাউন্সিলরের মৃত্যুর পর ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে চসিকের নির্বাচনী ইতিহাসে রেকর্ড করে আলোচিত নূর মোস্তফা টিনু ৭৮৯ ভোট পেয়ে জয়ী হন।
২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নগরের কাপাসগোলা এলাকার বাসা থেকে অস্ত্র গুলিসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন নূর মোস্তাফা টিনু। সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। পরে জামিনে বের হন। নূর মোস্তাফা টিনুর বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অস্ত্র আইনে পাঁচটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি নগর যুবলীগের এক কর্মীকে তার ওয়ার্ড কার্যালয়ে নিয়ে পেটানো ও হুমকির অভিযোগে করা মামলায় কারাগারেও গিয়েছিলেন তিনি। নূর মোস্তফা টিনু নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত কিশোর গ্যাং লিডার বা নেতা। তার একার প্রশ্রয়ে রয়েছে ১৪টি কিশোর গ্যাং।