মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন ১৭ নভেম্বর ২০২৪ , ৫:৫১:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী মহানগরীর নতুন বিলসিমলা এলাকায় মৃত্যু ব্যাক্তির নামে থাকা জমি গোপনে নিজ নামে নামজারি করে পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের ওয়ারিশদের কাছে বিক্রয়ের অভিযোগের পাওয়া গেছে।
আর এ গুরুতর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে রাজশাহী মহানগরীর ৩ নং ওয়ার্ডের নতুন বিলশিমলা এলাকার মৃত বদর উদ্দিন ও মৃত আরকাতুন বেওয়ার ওয়ারিশ বাবুল আক্তার বাবলু দিংদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় বেশ চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে নতুন বিলসিমলা এলাকায়, প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে একই কথা কিভাবে মৃত ব্যক্তির হোল্ডিং থেকে ১১ ছটাক জমি অন্যের কাছে বিক্রিও করলেন, আবার কি দেখে পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম দিংরা জমি ক্রয় করলেন এ নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার অর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিলসিমলা এলাকার মৃত লাইলি বেওয়ার ওয়ারিশগণ ও এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নগরীর নতুন বিলসিমলা এলাকার জেএল ৭৭ বহরমপুর মৌজার সাবেক ১৬০ খতিয়ানের ২৪১ দাগের আরএস ২৬৯ খতিয়ানের ৩৩৭ দাগে ১৯৬৭ সালের দলিল মুলে .০৪১৩ শতাংশ জমির মালিক সাংবাদিক লিয়াকত দিংরা। ভোগ দখল থাকা অবস্থায় ২০০৪-২০০৫ এল এ কেসে .০২৮৭ অধিগ্রহণ হয়। অধিগ্রহণ বাদে লাইলি বেওয়ার ওয়ারিশগনের ৪৪০৮ খতিয়ান মুলে.০১২৫ শতাংশ বা সুয়া শতক জমি প্রাপ্ত হন। সেই জমিতে চোখ পড়ে বিলসিমলা এলাকার নব্য ভুমি দস্যু বাবলু আক্তার দিংদের।
সেই জমি না কৌশলে লাইলি বেওয়ার ওয়ারিশ সাংবাদিক লিয়াকতদের না জানিয়ে গোপনে পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম ও বাবলুদের মধ্যে ৫ লক্ষ টাকায় রফাদফা হয়।
মৃত লাইলি বেওয়ার বড় ছেলে লালু বলেন, সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কাজে ২০০৪-০৫ এলএ কেসে ভূমি অধিগ্রহনের পর আমাদের সুয়া শতক জমি অবশিষ্ট থাকে। হঠাৎ গত ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারী বিষয়টি জানতে পারি আমাদের পার্শ্ববর্তী ৩৩৮ দাগের ওয়ারিশ ০.০১১০ শতাংশ জমি তলে তলে নিজ নামে করে নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার রবিউল ইসলাম এর কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন ভুমি হারা মৃত লাইলী বেওয়ার ওয়ারিশগন।
আদালতে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোন বুদ্ধি নাই তাই আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি আশা করি আমরা ন্যায়বিচার পাব। আমাদের ওয়ারিশন সূত্রে পাওয়া জমি ফেরত চাই। সেই সঙ্গে এই জালিয়াতিতে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে লাইলি বেওয়ার ছোট ছেলে সাংবাদিক লিয়াকত বলেন, এভাবে রেকর্ডীয় সম্পত্তির মালিকের হোল্ডিং থেকে জমি উধাও করে দেওয়া সমাজের প্রতি একটি অশনি সংকেত। আবার পুলিশ কর্মকর্তা আইনের লোক হয়ে কিভাবে বেআইনি কাজে অংশগ্রহণ করল তা আমার বোধগম্য নয়। যাচাই-বাছাই ছাড়া এভাবে জমি ক্রয় বিক্রয় হলে সাধারণ মানুষের মনে বাড়ির ভিটা নিয়ে সংশয় থেকে যায়। বিভিন্ন আইন করেও এদেরকে থামানো যাচ্ছে না। এই সিন্ডিকেটের হাত থেকে ২০০৪-০৫ এলএ কেসের অধিগ্রহণের নোটিশ পাওয়ার পর থেকে বিগত ১৯ বছরে বিলসিত এলাকার খাইরুল ইসলাম, সহিদুর রহমান, শাহাদত হোসেন আমির হোসেনের ওয়ারিশগন, ডেভলপার আব্দুর রশিদ, কেউই রেহাই পাইনি এদের হাত থেকে। অনুসন্ধানে জানা যায় প্রকৃতপক্ষে এরা নব্য ভূমিদস্যর একটা সিন্ডিকেট, এরা সদর জজ কোর্টে দেওয়ানি মামলা করে হয়রানি করে অর্থ আদায় করায় এদের মূল উদ্দেশ্য। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি এবং সেই সাথে আর কোন মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত বাবলু বলেন, ওরা যার কাছে জমি কিনেছে আমরাও তার কাছে থেকে জমি কিনেছি। ওদের মধ্যে আমাদের জমি ঢুকে ছিলো তাই নিয়েছি।
ওয়ারিশদের না জানিয়ে ০.১১০ শতাংশ জমি বিক্রি করার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা লাইলি বেওয়ার বড় ছেলে লালুকে জানান হয়েছিল লিয়াকত তখন ছোট ছিল। তিনি আরও বলেন, আমাদের আর এস ৩৪০ দাগের মধ্যেও জমি ঢুকে আছে আমরা আদালতে মামলা করেছি।
জমি ক্রেতা পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, হ্যা আমরা ৩৩৭ দাগে ১১ ছটাক জমি কিনেছি বাবলুদের কাছে।
বাবলুরা আমাদের নামে আদালতে মিসকেস করেছিল আব্বা না বুঝে সই দিয়েছে ওটাতে আমারা রায় পেয়েছি এর বেশী কিছু বলতে পারবো না। তৃতীয় পক্ষের একজন কাজ করছে আমি বুঝতে পেরেছি। আমাদের জমির কোন সমস্যা নায় বলে ফোন কেটে দেন।