অপরাধ - দূর্নীতি

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আ,লীগের পলাতক নেতাদের আশ্রয়দাতা বাচ্চু আর্ট

  মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন ২৮ মার্চ ২০২৫ , ১০:২৬:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর নগরীর অলকার মোড়ে অবস্থিত বাচ্চু আর্ট বিগত সময়ে ছিল জেলা আওয়ামীলীগের চেম্বার। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে সেখানে চলতো বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা ও মদের আসর। মামলা ও বিভিন্ন অপকর্মের জন্য পলাতক আ,লীগ নেতা ও তাদের বেশ কিছু কর্মীদের বর্তমানে আশ্রয় ও রাজশাহীতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে বাচ্চু আর্টের মালিক বাচ্চু ও তার ভাগিনা শুভোর বিরুদ্ধে ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত সময়ে জেলা আওয়ামীলীগের বিশেষ করে বাগমারা উপজেলার অনিয়ম,দুর্নীতি, টেন্ডারবাজ, ভূমিদস্যু, ফসলি জমি হত্যা করে পুকুর খননের সিন্ডিকেটের মূলহোতা আওয়ামীলীগ নেতা ও চেয়ারম্যান জান মোহাম্মদ ও সেন্টুর ঘনিষ্ঠ ও পার্টনার বাচ্চু। ব্যানার ফেস্টুন প্রিন্ট প্রতিষ্ঠানের আড়ালে দোকানে চলতো তাদের দুর্নীতির পরিকল্পনা। বাগমারার বিভিন্ন ব্যাক্তি ও সরকারি কর্মকর্তাকে রাজশাহীতে ডেকে বাচ্চু আর্টে বসিয়ে মামলা-হামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন অথবা চাকুরী হারানো সহ বিভিন্ন ভাবে ব্ল্যাকমেল করে চাঁদা নিয়ে মাঝ রাত পর্যন্ত চলতো মদ সহ বিভিন্ন মাদকের জমজমাট আয়োজন। নিজে কখনও আওয়ামীলীগের পদ না নিলেও অনেক জেলা-উপজেলার নেতা ও চেয়ারম্যানদের ব্যাবসিক পার্টনার হিসেবে ঘনিষ্ঠ হয়ে তাদের বিভিন্ন অপকর্মের আড়ালে থেকে ভাগিদার ছিলেন বাচ্চু ও তার ভাগিনা শুভ। এমপি-মন্ত্রীর ব্যানার,ফেস্টুন বানিয়ে তাদের প্রচারের সহযোগিতা করার জন্য ভালো সম্পর্ক এমন নাম ভাঙ্গিয়ে তাদের বিভিন্ন নেতা ও চেয়ারম্যানদের সাথে পার্টনার হিসেবে জায়গা করে নেয় বাচ্চু ও তার সহযোগী ভাগিনা শুভ। এছাড়াও বাচ্চুর নিজ এলাকা নওগাঁর তার নিজের আত্মীয়র নিকট শুভর মাধ্যমে চাকুরী দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ করারও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার প্রতিষ্ঠানের প্রিন্ট মেশিন কিস্তি ভিত্তিক ক্রয় করে টাকা আত্মসাদ ও মামলা খেয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া বিগত সময়ে আ,লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে রাজশাহীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শুভকে পাঠিয়ে তাঁদের প্রোগামের সব কাজ যেন বাচ্চু আর্ট পাই এমন হুমকি দিয়ে কাজ নেওয়ার অনেক অভিযোগ রয়েছে। কর্মচারীকে কাজ করিয়ে তাদের ন্যায্য মূল্য না দিয়ে কম টাকা সেটাও গুড়িয়ে দেওয়ার জন্য তার কাজ করতে নারাজ হওয়া মানুষদের শুভ তার পোষ্য বাহিনীদের দিয়ে জোর করে কাজ করানোর একাধিক অভিযোগ উঠে আসে।

অলকার মোড়ের এসোসিয়েশন ভবনের মার্কেটের লোকজন জানায়, ৫ আগষ্টের পর আওয়ামীলীগের নেতাদের সঙ্গে বিগতে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকার কারণে বাচ্চু ও তার ভাগিনা শুভ আত্মগোপনে চলে যায়। ষষ্ঠীতোলার অনেক বিএনপির ছেলেরা বাচ্চুর খোঁজ নিতে প্রায় মার্কেটে আসে দলবল নিয়ে কিন্তু তাদের পাইনা। দোকান বন্ধ রেখেছিল বেশ কিছু দিন পরে দোকানে আসতে শুরু করে তার আরেক ভাগিনা জীবন । সে ভদ্র ও ভালো ছেলে বলে তাকে কেউ কিছু বলেনি। কিন্তু বাচ্চু আর শুভকে পাওয়া মাত্র এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা আটক করিয়ে দিবে সেটা আমরা ভেবে রেখেছিলাম। কিন্তু তাদের ও বেশ কিছু অসাধু সাংবাদিকদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে নেই বাচ্চু। এরপর মাস খানেক পর দোকানে আসে বাচ্চু ও শুভ। সে সময় বাগমারা থেকে পালিয়ে আসা সেন্টু চেয়ারম্যানের পিএ সুইটকে প্রায় বাচ্চুর দোকানে বসে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়াও শুভ সাবেক চেয়ারম্যান জান মোহাম্মদের ছেলে সহ তার পিএ রায়হানকে নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে। এরা সবাই দোকানে বসে বিভিন্ন আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে সামনে কিভাবে কি করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ করে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায় পরিকল্পনা চলে। এছাড়াও অন্য পলাতক নয়তো আটক হওয়া নেতাকর্মীদের সম্পত্তি দখল করার অপকর্ম করে আসছে। বাগমারার অনেক পলাতক নেতাদের পুকুরে বিষ ও মাছ চুরি করে টাকা ভাগাভাগি করতে দেখা গেছে। রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপি সহ তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে টাকা ভাগাভাগির জন্য তারা এখনও টিকে রয়েছে। মাছ চুরি করে বাগমারার আরেক বিএনপির গ্রুপকে ভাগ না দেওয়ার কারণে রাজশাহীতে লুকিয়ে থাকা চেয়ারম্যানের পিএ রায়হান কে বহরমপুর থেকে ডিবি পুলিশ দিয়ে আটক করার জানতে পেরেছি। এরপর শুভ জান মোহাম্মদের ছেলেকে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেই সাথে আরেক চেয়ারম্যানের পিএ সুইট সহ বাকিদের আর দেখা যায়নি। বাচ্চু নেতা না হওয়ায় আর আড়ালে থেকে অপকর্মের জন্য মামলা না খেয়ে আর বিগত সময়ের অবৈধ টাকা বিলি করে ঠিকে রয়েছে ।

ষষ্টিতলার বিএনপির সহযোগী সংগঠনের কর্মী জানাই, এরা আগেতো বহু দুর্নীতি সহ আমাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করিয়েছে সে কারণে তাদের দুইজনকে আইনের আওতায় দিবো ভেবে রেখেছিলাম। কিন্তু আমাদের সিনিয়ররা টাকা খেয়ে আমাদের হাত পা বেঁধে রেখেছে। এছাড়াও ৫ আগষ্টের আগে এরা লীগের ক্ষমতার অপব্যবহার করে আর এখন হিন্দু ট্যাগ লাগিয়ে টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ করে রেখেছে। শুভ এখনও জেলা আওয়ামী লীগের আটক হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। পরিবারের নিকট টাকা নিয়ে জেল খানায় প্রায় টাকা লাগিয়ে আসে। জামিনের জন্য কোর্টে আর উকিলদের পিছে ধরিয়ে বেড়াচ্ছে।

কুমারপাড়ার বাসিন্দা ইমন জানায়, আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়ে টাকা দেইনাই। সেজন্য আমি তার কাজ করবনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেজন্য বাচ্চুর ফোন না ধরায় মাইক্রোতে সন্ত্রাসী নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান সেন্টু বাসায় এসে আমাকে জোর করে মেরে থানায় দিয়েদিবে সহ অক্ষত ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। বাধ্য করে কাজে নিয়ে সারারাত খাটিয়ে ৩-৪ মাস গুড়িয়ে টাকা দিয়েছে তবু সম্পূর্ণ না। এরপর আমি সুযোগ বুঝে তাদের থেকে সরে গেছি। আওয়ামীলীগের সময়ে এই এমপি ওই মন্ত্রী আমার আমি যা বলবো তাই হবে এমন বয়ান দিয়ে অনেক চেয়ারম্যান আর নেতাদের সাথে সম্পর্ক করে একাধিক অনিয়ম দুর্নীতি করেছে এদের মামলা না দিয়ে অনেক নির্দোষদের মামলা দিয়ে রেখেছে বর্তমানে বিএনপির লোকজন।

এবিষয়ে জানতে বাচ্চু ও তার ভাগিনার সাথে যোগাযোগ করলে তারা সব অভিযোগ অস্বিকার করে সাথে সংবাদ প্রকাশ হলে অফিসে হামলা করে বলে ভয় দেই। সাথে বিএনপির লোকজন দিয়ে ফোন করিয়ে বিরক্ত করতে থাকে।

আরও খবর

Sponsered content