প্রতিনিধি ৫ জুন ২০২৫ , ১১:২৩:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে ৫ আগষ্টের পর থেকে বিতর্কিত পুলিশ সদস্যদেরকে রাজশাহীর জনগনের বন্ধু করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আরএমপি পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান। এরপরেও আওয়ামীলীগ পন্থি, ছাত্রলীগের কোটা সহ কিছু ধান্দাবাজ পুলিশ সদস্যর কারনে রাজশাহীতে একের পর এক পুলিশ সদস্য বিতর্কিত হচ্ছেন যার ফলে পুলিশ কমিশনারের নেওয়া পদক্ষেপ গুলো বিফলে যাচ্ছে।
নতুন ওসি যোগদানের পর থেকে এমনই একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার বিরুদ্ধে। তদন্ত ছাড়াই মিথ্যা মামলা নেওয়া, সঠিক মামলার ব্যবস্থা না নেওয়া, টাকা দিলে মামলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে, মামলা করতে আসা মানুষকে হয়রানি করা এছাড়াও মাদক ব্যবসায়ী, জুয়ার বোর্ড ও আবাসিক হোটেল থেকে মাসিক চাঁদা নেওয়ারও একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানার বিরুদ্ধে।
এমনই বোয়ালিয়া থানার একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয় রাজশাহীতে অবৈধভাবে ‘মেগা লাকি ড্র’ এর নামে লটারি বিক্রি করে জনগণের সাথে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও এইচটিএন ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সেই অভিযোগে আনুমানিক ৫০ জন ভুক্তভোগীর সাক্ষীসহ সকল তথ্য প্রমাণ অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রনিকে দেওয়ার পরেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেইনি প্রতিষ্ঠানের মালিক নাঈম এর বিরুদ্ধে। যার কারণ খুঁজতে যেয়ে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রতারক নাঈম হোসেন এর সাথে এস আই রনির আগের একটি মামলা থেকেই বেশ সুসম্পর্ক ছিলো তার সাথে যার কারণে তার বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগে কোন ব্যবস্থা নেননি এসআই রনি।
আগের ঘটনার সূত্রে জানা যায়, বোয়ালিয়া থানায় নাঈম হোসেন লিখিত এজাহার দায়ের করেন যার মামলা নাম্বার ১৩/৩৪৫ , দুইজন ব্যক্তির নামে চাঁদাবাজি দোকান লুটপাট বিষয় তুলে ধরেন। সেই মামলার দায়িত্ব পান এসআই রনি। তিনি মালামাল ফেরতসহ আসামির ব্যবস্থা শক্তপোক্ত চার্জশিট দেওয়ার নামে নাঈম হোসেনের নিকট ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে ভাইরাল। অডিওতে মামলার বাদী নাঈম এসআই রনিকে বলছেন সাইফুল মুন্সির মাধ্যমে কিছু টাকা ওসি সাহেবকে দিয়েছিলাম আর আপনাকে আমি মোবাইল বিক্রি করে যে টাকা দিয়েছিলাম সেই টাকাটা যদি একটু ফেরত দিতেন টাকা দিয়েও তো আমার কোন কাজ করছেন না। অপরপাশে এসআই রনি বলছেন,আপনি সাক্ষীদের নাম ঠিকানা দেন আমি তদন্ত করছি।
এছাড়াও নাঈম হোসেন মুঠোফোনে জানান, বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মাসুদ পারভেজ থাকা কালিন মামলা দিয়েছি উনি থাকলে এতদিন হয়রানি সহ ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়াও লাগতোনা। আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে সেটার কিছু টাকা ফেরতের আসায় তদন্ত অফিসার এসআই রনিকে মালামাল উদ্ধার সহ আসামির আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার চুক্তিতে ২০ টাকা দিয়েছি । সেই সাথে নতুন ওসি যোগদানের পর বোয়ালিয়া থানার মুন্সী সাইফুল, ওসি মোস্তাক’কে খুশি করে অনুমতি নিয়ে ফরিদপুর যেয়ে ডিবি দিয়ে ফরিদপুর থেকে মামলার আসামিদের আটক করা হবে এই আশ্বাস দিয়ে আবারো ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেন। ঘুষ নিয়েও আসামি পক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। বোয়ালিয়া থানা এখন কতটা অনিয়ম করছে সেটা আপনার আরও ভাল জানেন। নতুন ওসির নামে কয়দিন আগেও নিউজ হয়েও এখনো পরিবর্তন হয়নি। আমি শিওর আসামি পক্ষের নিকট তারা মোটা অংকের টাকা নিয়েছে সেই জন্য আমার মামলার ব্যবস্থা নেয়নি ( এই সমস্ত কথার কল রেকর্ড গণমাধ্যমের নিকট সুরক্ষিত রয়েছে) ।
এই বিষয়ে জানতে র্যাব-১০ এর এক অফিসার বলেন, এই মামলায় আসামিদের নামে এমন আরো অভিযোগ রয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করে বোয়ালিয়া থানায় হ্যান্ডওভার করতে চাইলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই রনি গ্রেপ্তারের জন্য কোন সহযোগীতা না করার কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মোস্তাক হোসেন জানান, আমি নাঈম হোসেনকে চিনিনা । মুন্সি আর রনির সাথে কথা বলে দেখি এমন কিছু ঘটনা হয়েছে কিনা। কিন্তু এসআই রনি মামলার বাদীকে মুঠোফোনে বলেছেন আমি ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু ওসি অনুমতি দেয়নি ( যার কল রেকর্ড গণমাধ্যমের নিকট রয়েছে)।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রকিবুল হাসান ইবনে রহমান জানান, এমন ঘটনা হয়ে থাকলে সেটার তথ্য প্রমাণ থাকলে অবশ্যই অভিযুক্তদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সাথে ভুক্তভুগী পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে আরও ভাল হয়।

















