নিজস্ব প্রতিবেদক ৯ জুলাই ২০২৫ , ১১:২৫:১০ প্রিন্ট সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির জন্য জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘অন্বেষণ’-এর একটি লাইভ ক্লাসে ঘটে যাওয়া ন্যাক্কারজনক ও অশ্লীল ঘটনার তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় যুব সংগঠন ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস)। সংগঠনটি এই ঘটনাকে শিক্ষার পবিত্র অঙ্গনে সংঘটিত গুরুতর অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে।

গত ৮ জুলাই, রাত ১২টায় ‘অন্বেষণ’ কোচিং সেন্টারের লাইভ ক্লাস চলাকালে এক অজ্ঞাত পুরুষ শিক্ষক ও নারী শিক্ষক সামিরা প্রকাশ্যে অশালীন ও যৌনতাপূর্ণ আচরণ করেন। এ ঘটনার ভিডিও দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়ায়। ঢাকার গুলশান এলাকার এক অভিভাবক ইতিমধ্যেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভাটারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই অনৈতিক কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং শিক্ষকতার মর্যাদাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
ইয়্যাসের সভাপতি, লেখক ও উন্নয়নকর্মী মো. শামীউল আলীম শাওন বলেন, “শিক্ষার মতো একটি পবিত্র স্থানে এমন নোংরা ও অবমাননাকর আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির ক্ষতিকর প্রভাব শুধু সেই ক্লাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি দেশজুড়ে অসংখ্য কোমলমতি শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশে দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমরা এর দ্রুত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং অভিযুক্ত দুই শিক্ষকসহ দায়ী সকলের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।”

ইয়্যাসের সুনির্দিষ্ট দাবি:
১. দৃষ্টান্তমূলক তদন্ত ও বিচার: ভাটারা থানায় দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষক এবং সম্ভাব্য মদদদাতাদের দ্রুত চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।
২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা: সকল অনলাইন ও অফলাইন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নৈতিকতা ও আচরণবিধি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা।
৩. কঠোর নীতিমালা: সরকারের মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষার জন্য পৃথক আচরণবিধি প্রণয়ন ও কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
৪. নৈতিকতা ও সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ: শিক্ষকদের নিয়মিত নৈতিকতা, দায়িত্বশীল আচরণ ও সাইবার আচরণবিধি বিষয়ে প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা।
৫. শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত অনলাইন শিক্ষা: কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন শিক্ষাকে একটি নিরাপদ, অশ্লীলতামুক্ত ও মানসিকভাবে স্বস্তিদায়ক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলা।
ইয়্যাসের সভাপতি আরও বলেন, “এই ঘৃণ্য ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সম্মিলিত ও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। আমরা সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, যেন শিক্ষার পবিত্রতা ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্থতা রক্ষায় একযোগে কাজ করা হয়।”

















